আমেরিকায় মাইগ্রেট করা পরিবারে মেয়ে লিসা। মা-বাবা ইংলিশ জানতো না। বাবা একটা ফ্যাক্টরিতে মজদুরের কাজ করতেন। খুব ছোট একটা বাড়িতে তাদের থাকতে হতো। ৭ জন ভাই বোনের মধ্যে পঞ্চম।এতো গুলো ভাই-বোনের মধ্যে পরিবারেই তার হারিয়ে যাওয়া স্বাভাবিক।সে পরিবারে ভালোবাসা পায় নি তা নয় কিন্তু কখনো নিজেকে স্পেশাল কিছু অনুভব করিনি।
একদিন সকুল থেকে আসার পথে কিছু ছেলে তাকে আটকালো। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে তাকে বলতে লাগলো তুমি আমাদের মত না। তুমি ভিন্ন কেউ। সবাই তোমাকে ঘৃনা করে। লিসা ছেড়া জামা কাপড় পড়ে খুড়ীয়ে খুড়ীয়ে বাসা যখন ফিরেতেছিলো সারাক্ষন তার কানের কাছে এই কথা গুলো বাজতে ছিল। তুমি ভিন্ন কেউ, আমাদের মতো নও, সবাই তোমাকে ঘৃণা করে।
ছোট লিসা বাসায় ফিরে এসে চুপ হয়ে রইলো। কাউকে জানাবার সাহস পায়নি। এরপর থেকে লিসা যত দিন সকুলে গিয়েছে তত দিনেই সারাক্ষন এই কথাগুলো তাকে তাড়িয়ে বেড়াতো। সে আলাদা হয় থাকত। বিশ্বাসই করতো সে ভিন্ন কেউ। তাকে সবাই ঘৃণা করে।
কলেজ শেষে এক পার্টিতে একটা ছেলে তাকে আড়ালে ডেকে নিলো। এই ছেলেটি সেই ছেলেটি যে তাকে ধাক্কা দিয়ে মাঠিতে ফেলে এই কথা গুলো বলেছিলো। ছেলেটি একটি চিরকুট দিলো। তাতে লেখা ছিল – আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি রাজী থাকলে টিক অথবা ক্রস চিহ্ন দাও। এই দিন লিসার ভাবনার জগত বেশ ধাক্কা খেল।
সে যা নিজের সম্পর্কে ভাবতো তার সাথে ছেলেটির কথা মেলাতে পারছিলো না।
লিসা উনিভারসিটিতে সাইকোলজি নিয়ে পড়াশুনা করেছে। একদিন তার এক বান্ধবীর সাথে দেখা হলে সে তাকে বলে তুমি সেলসে কাজ শুরু করো। তুমি সেলসে ভালো করবা। লিসা বললো আমি কিভাবে সেলসে কাজ করবো।
লিসার নিজের সম্পর্কে ধারনা তাই ছিল ছেলেটি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে যা বলল তাই। কিন্তু তার এই বান্ধবীর জোড়া জুড়িতে সে সেলসে কাজ শুরু করলো।অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সে সাফল্য পেতে শুরু করল। টাকা, পুরস্কার, অবস্থান খুব দ্রুত হলো। বিশাল বাংলো কিনলো পরিবারের জন্য। বিয়ে হলো মিলোনিয়ার এক ব্যবসায়ীর সাথে।
দুইটি বিষয়ঃ
১) কেবল একজনের উৎসাহই যথেস্ট আপনার জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দেয়ার জন্য
২) আপনার সম্পর্কে অন্যদের মন্তব্য কেবলই ধারনা বা অপিনিয়ন মাত্র। তাতে সত্য বলে কিছু নাই। আপনি কি সেটা আপনি জানেন। তাদের অপিনিয়নকে গুরুত্ব দেয়ার কোন প্রয়োজন নাই।
সোর্সঃ কোন একটা ভিডিওতে দেখেছিলাম। ভাবলাম লিখে রাখি।