শুরুর দিকে মানে ধরুন আর ৭/৮ বছর আগে খুব সহজেই অনলাইন থেকে আয় করার কোর্স গুলো নিয়ে সমালোচনা করে লিখতাম। আমি ভাবতাম এই যে সহজেই আয় করার বিষয়টি প্রমোট করছে তাতে আমাদের দেশে ইজি ইনকামটা খুব এস্টাবিলশড হয়ে যাবে আর কেউই স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য খাটাখাটি করবে না।
আমি ভাবতাম ব্রাজিলে যে ফুটবল খেলে সে ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন দেখে ইংলিশ বা স্প্যানিশ লিগে খেলবে। তাই সে সেভাবেই কঠিন পরিশ্রম করে নিজেকে তৈরি করে নেয়। আমাদের এখানে হয়তো বড় জোড় আবহণী বা মোহামেডানে খেলার স্বপ্ন দেখে। পরে দেখা যায় রহমত গঞ্জ বা ফরাশগঞ্জে খেলে।
যাই হোক আমি চাইতাম সবাই ভাবুক যে সে ওয়ার্ল্ড ক্লাস প্রোগ্রামার, ডিজাইনার, মার্কেটার বা এণ্ট্রেপ্রেনিয়র হবে।প্রচার, প্রচারনা কিংবা ট্রেনিং সব জায়গায় যে এই বিষয়টা নতুনদের মগজে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। তাই ইজি ইমকাম নিয়ে কিছু দেখলে আমি সমালোচনা করতাম। আমি জানতাম সাফল্য আসলেও সেটা সাময়িক। স্থায়ী কিছু না।
একদিন রংপুর থেকে এক অনলাইন প্রফেশনাল চটগ্রামে আসছে আমার সাথে দেখা করতে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম সে এখন কি করে। সে বললো আমি স্পোর্টস এফিলিয়েট করি। কিন্তু এখন আর ভালো কিছু করতে চাই। এসইও শিখবো। সে জানালো সে খুব কস্ট করে বড় হয়েছে। তার বাবা নাই। তার মা ও বোন মিলে কোন এক আত্নীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়ে থেকেছে। কোন রকমে টিকে ছিল।
আমি বললাম যা করছো তাতে আয় কেমন। ও বললো যা করছি সেটা নিয়ে আমি ভাবছি না। আমার আনন্দ আমি যা করছি তা দিয়ে ছোট একটা জায়গা মাকে কিনে দিয়ে নিজের বাড়ি করেছি। ওর ফিলিংসটা আমি বুঝেছি।
এরপর থেকে আমি কোন কোর্স নিয়ে সমালোচনা করি না। আমি সব সময় ওর কথা ভাবি। আমি ভাবি কেউ যদি মাসে দুই/তিনশ ডলার আয় করার মতো কিছু শিখে হয়তো সেটাই তার পরিবারের জন্য অনেক অনেক বড় কিছু। সমালোচনা করলে হয়তো এরা সেই সুযোগটা পাবে না। কোন কোর্সে শতভাগ সফল হয় না। কেউ না কেউ তো একটা উপায় পেয়ে যায়। হয়তো এর মধ্যে এমন কেউ থাকতে পারে যদের মাসে ১০ হাজার টাকা খুবই প্রয়োজন।
সোর্সঃ ফেসবুক পোস্ট