জেপি ( নিক নেম) লন্ডনের অভিজাত একজন ফিটনেস কোচ। বছরে মাত্র ৮ জন ক্লায়েন্টের সাথেই সে কাজ করে। আসলে লন্ডনে জেপি খুব বেশি পরিচিতও না। আপনি যদি তার সাথে যোগাযোগ করেন তাহলে সে আপনাকে কিছু প্রশ্ন পাঠাবে। তার উপর ভিত্তি করে সে হয় আপনাকে তার ক্লায়েন্ট বানাবে অথবা অন্য কোন ফিটনেস কোচের কাছে পাঠাবে।
জেপি ফিটনেস প্রোগ্রামের ফি ৪০ হাজার পাউন্ড। যে সমস্থ বিজনেস পারসনরা প্রায় প্লেনে নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে হয়, জেপি শুধু তাদেরকেই তার ক্লায়েন্ট হিসাবে নেয়। জেপির ফিটনেস প্রোগ্রামের যে মেথডলোজি যারাই সে মেথডলোজিতে বিশ্বাস করে কিংবা তা মেনে চলার মতো কমিটেড জেপি তাদেরকে বেছে নেয়।
লন্ডনের ফিটনেস মার্কেট এতোটা এক্সপেন্সিভ না। অধিকাংশ ফিটনেস কোচ হয়তো ঘন্টায় ৪০ পাউন্ড আয় করে। জেপিও তাই ছিলো। সে প্রায় সারাদিনই কাজ করতে হতো। যেই ক্লায়েন্টেই তার সাথে যোগাযোগ করতো তার সাথেই সে কাজ করতো। কখনো কখনো এক্সট্রা আওয়ার কাজ করতো ক্লায়েন্টকে ছাড়তে চাইতো না বলে। জেপির জীবন যাপনটা এক ধরনের সংগ্রামী জীবনই ছিলো। সেও ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্থ হয়ে পরতো।
জেপি অভারস্ক্রাইব ফিলোসপি গ্রহন করেছিলো। সে প্রথমত তার ফিটনেস প্রোগ্রাম একটা সুনিদিস্ট ক্লায়েন্ট গ্রুপের জন্য তৈরি করে নিলো। তাদের লক্ষ্য পূরণ করার জন্য তার প্রোগ্রাম এমন ভাবে তৈরি করলো যেনো তার ক্লায়েন্টের এক্সপেরিয়েন্স ৫ স্টার মানের হয়।
জেপি মার্কেট যেমন তেমন ভাবে সার্ভিস দেয় নি। জেপি নিজের একটা মার্কেট তৈরি করে নিয়েছে। তার মার্কেটে ক্রেতা বেশি সেলার কম। তাকে ক্লায়েন্টকে চেজ করতে হয় না। ক্লায়েন্ট তাকে চেজ করতে হয়। জেপির বছরে মাত্র ৮ জন ক্লায়েন্ট লাগে অভারস্ক্রাইব হতে।
আমরা যারা সার্ভিস মার্কেটে কাজ করি বিশেষ করে আমাদের ফ্রিল্যান্সারদের অনেকে জেপির প্রথম স্ট্রাগল টাইমের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাবে। রাত-দিন কাজ করে এমন অনেকে আছে। এমন অনেকে আছে নিয়মিত কাজই পাচ্ছে না। এমন অনেকে আছে খুব কম রেটে কাজ করতে হয়। অনেকে আছে যেই কাজ আসে তাই করতে হয়। পারলে নিচ্ছে না পারলেও নিচ্ছে। কারণঃ
১) নিজের স্কিল ও সার্ভিস স্পেশালাইজড না
২) নিজের মার্কেট না , যেই মার্কেট আছে সেই মার্কেটই কাজ করা
৩) ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি
৪) নিজের ব্রান্ডিং, মার্কেটিং ও রিমার্কেবল কাস্টোমার এক্সপেরিয়েন্স তৈরি করতে না পারা
বিঃদ্রঃ জেপির ইচ্ছা হল ৪০ হাজার পাউণ্ড করে দিলো প্রোগ্রাম আর ঠিক করলো ৮ জন ক্লায়েন্টের সাথেই কাজ করবে আর অমনি সব হয়ে গেলো তা কিন্তু না। নিজের মার্কেট ঠিক করা, হাই কোয়ায়লিটি প্রোগ্রাম তৈরির পরে তার কাস্টোমার একুইজিশন নিয়ে কাজ করতে হইছে। সেই বিষয় গুলো পরের লেখা গুলোতে আসছে। 🙂
সোর্সঃ ফেসবুক পোস্ট